বাস্তব জীবনের ছোট ছোট গল্প | সফলতা নয় বাস্তব স্টাটাস

 বাস্তব শিক্ষা নিয়ে ছোট গল্প

বাস্তব শিক্ষা নিয়ে ছোট গল্প

বাড়িতে তখন তিন বেলা চাল থাকত না, তবুও সে ঠিক করেছিল, নিজে কিছু করবে। ছোট ভাইকে স্কুলে পাঠিয়ে নিজে টিউশনি করে খরচ চালাত। এক সময়ের সেই দুঃসময় তাকে শিখিয়েছে—অভাবের মাঝেই ভবিষ্যতের শিকড় পোঁতা থাকে। এখন সে নিজের ছোট একটা ফার্নিচারের দোকান চালায়। ধনী হয়তো এখনো হয়নি, কিন্তু কারও কাছে হাত পাততে হয় না।

---

মাঠে খেলতে যেতো না সে, কারণ তার পায়ে ভালো জুতা ছিল না। সারাদিন বাবার দোকানে বসে খরচ বাঁচিয়ে একটা মোবাইল কিনেছিল। ওই মোবাইলেই সে ছবি তুলতে শিখেছিল। আজ সে পেশাদার ফটোগ্রাফার, বিয়ের সিজনে ক্যালেন্ডার ভর্তি হয়ে যায় বুকিংয়ে। মানুষ ভাবে, বড় ক্যামেরা দিয়েই সফলতা আসে। আসলে আসে সাহসে।

---

গ্রামে বাস করে ছেলেটা। ইন্টারনেট ভালো চলে না। তবুও মোবাইলের স্পিড কমিয়ে কমিয়ে সে প্রতিদিন খবর পড়ে, নতুন কিছু শিখে। তার স্বপ্ন নেই গাড়ি-বাড়ি কেনার, সে শুধু চায় তার মাকে হাসাতে। এখন সে স্থানীয় এক দোকানে সেলস বয়, কিন্তু নিজের হাতেই সংসার টানছে। ধনী না, কিন্তু গর্ব করতে পারে নিজের রোজগার নিয়ে।

---

বন্ধুরা যখন রাতের বেলা গল্প করতো, সে তখন বাসায় গ্যাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঠান্ডা ভাতে খেতো। এসব বলার কেউ ছিল না। সে একদিন ঠিক করেছিল, নিজের চায়ের দোকান দেবে। রাস্তার পাশে ছোট করে শুরু করেছিল, এখন দিনে পাঁচশো কাপ বিক্রি হয়। ইচ্ছা ছিল না বড় কিছু হওয়ার, ছিল শুধু আত্মসম্মানের জন্য কিছু করার।

---

যে ছেলেটার একজোড়া প্যান্টে ছিদ্র ছিল, সে আজ টেইলার্স চালায়। ছোটবেলায় নিজের জামা নিজে সেলাই করতে গিয়ে শিখেছিল হাতের কাজ। সবাই বলতো “এতে কিছু হবে না।” এখন সবাই তার দোকানে সেলাই দিতে আসে। নিজের হাতে সেলাই করা সাফল্যটাই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়।

---

পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল না সে। শিক্ষকরা বলতো, “তুই কিছু করতে পারবি না।” কিন্তু সে জানতো, তার হাতে স্বপ্ন আছে। হোটেলের ওয়েটার হিসেবে শুরু করেছিল, ধীরে ধীরে হোটেল ম্যানেজার হয়েছে। এখন মালিক তাকে আপনি করে ডাকে। ডিগ্রি না থাকলেও, তার কর্মটাই তার যোগ্যতা।

---

বয়স যখন ১৮, তখন সে পকেট মানি চাইতে লজ্জা পেত। তাই সকালে কাগজ বিক্রি করতো, রাতে কলেজে যেত। তার জীবন একটানা ছিল, তবুও সে হার মানেনি। আজ সে একটি ছোট লাইব্রেরি চালায়। বইয়ের প্রতি ভালোবাসা তাকে রুটি দিয়েছে। সে হয়তো টাকার গাঁট নয়, কিন্তু সম্মানের ঠিকানা বানাতে পেরেছে।

---

মা অসুস্থ, বাবা বেকার। তাই পড়াশোনার ফাঁকে সে একটা ছোট মুদির দোকানে কাজ নিলো। অন্যরা বলতো, “লজ্জা করে না?” সে বলতো, “ভিক্ষা নয়, কাজ করছি।” ধীরে ধীরে দোকানদার তাকে একজন বিশ্বস্ত মানুষ হিসেবে দেখলো। পরে সেখানেই সে পার্টনার হয়ে গেলো। সে এখন জানে—লজ্জা নয়, অভাব থেকে উঠতে হলে মাথা উঁচু করে কাজ করতে হয়।

---

ইলেকট্রিশিয়ানের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। গরমে ছাদে উঠে তার দিন কাটত। একদিন সে নিজেই চিন্তা করলো, কেন না সে নিজের একটা টুলস সেট কিনে নিজে কাজ শুরু করবে। চুপচাপ করে গেলো। এখন যে বাড়ি মেরামত করত, তারই সামনে গাড়ি করে যায়। সবার চোখে বিস্ময়—কিন্তু তার চোখে এখনো মাটির মানুষটার দৃশ্য ভাসে।

---

ছেলেটা শহরে আসার সময় সাথের ছিল শুধু একটা ব্যাগ আর ২০০ টাকা। কাজ খুঁজতে গিয়ে কতবার অপমান হজম করেছে, কেউ দেয়নি কাজ। শেষে সে ঠিক করেছিল, নিজে খাবার রান্না করে বিক্রি করবে। শুরু করেছিল ২ প্লেট দিয়ে। এখন অফিস-অফিসে তার খাবার যায়। ধনী না, তবুও তার চোখে এখন প্রশান্তি।