সান্ডা আসলে কী? ইসলাম কী বলে সান্ডা সম্পর্কে? সান্ডা খাওয়া যায়? কি

 সান্ডা আসলে কী? ইসলাম কী বলে সান্ডা সম্পর্কে? সান্ডা খাওয়া যায় কি? সম্পূর্ণ আলোচনা

সান্ডা-আসলে-কী-ইসলাম-কী-বলে-সান্ডা-সম্পর্কে-সান্ডা-খাওয়া-যায়-কি

আমরা ছোটবেলায় অনেক সময় একটা নাম শুনতাম — সান্ডা। কেউ বলত, “সান্ডা তেল লাগালে হাঁটুর ব্যথা সেরে যায়”, কেউ আবার গোপনে বলত, “ভাইরে, সান্ডা খাইলেই নাকি সব শক্তি একদম আগের মতো!” তখন বুঝতাম না ব্যাপারটা কী, কিন্তু এখন বড় হয়ে বুঝি — এই সান্ডা জিনিসটা শুধু কোনো প্রাণী নয়, এটা একটা সমাজের ভুল বিশ্বাস, গুজব আর কৌতুকের মিশ্রণ।

---

সান্ডা আসলে কী?

সান্ডা হচ্ছে একটা ছোট গুইসাপ জাতীয় প্রাণী, যেটার বৈজ্ঞানিক নাম Saara hardwickii। এটি মরুভূমিতে থাকে, দেখতে একটু মোটা ও লেজে কাঁটা কাঁটা থাকে। আমাদের দেশে হয়তো সরাসরি পাওয়া যায় না, কিন্তু ভারতের রাজস্থান, পাকিস্তান এমন কিছু এলাকায় পাওয়া যায়।

এই প্রাণীটা থেকে তেল বের করা হয়, যেটা হেকিমি বা লোকজ চিকিৎসায় “সান্ডা তেল” নামে পরিচিত।

---

সান্ডা খাওয়া যায়?

সরাসরি বললে — না, সান্ডা খাওয়া উচিত নয়।

সান্ডা থেকে যে তেল বের হয়, সেটা কিছু মানুষ যৌন শক্তি বাড়াতে ব্যবহার করে। কিন্তু এটা কোনো মেডিকেল প্রমাণিত ওষুধ নয়। তাছাড়া মুখে খাওয়ার মতো না।

আর একটা কথা মনে রাখা দরকার—

> যে জিনিস শরীরের জন্য নিশ্চিত নয়, সেটা না খাওয়াই ভালো।

অনেকে বলছে খেলে নাকি শরীর আগের মতো ফুরফুরে হয়। কিন্তু এই গুজবেই অনেক মানুষ শরীরের ক্ষতি করে ফেলছে, এটা জানার মতো কথা।

---

ইসলাম কী বলে সান্ডা সম্পর্কে?

এই বিষয়ে ইসলাম খুবই ব্যালান্সড মত দিয়েছে।

রাসুল (সাঃ)-এর সামনে একবার সান্ডা পরিবেশন করা হয়েছিল। তিনি সেটা নিজে খাননি, কিন্তু খেতে মানাও করেননি। সাহাবাদের মধ্যে কেউ কেউ খেয়েছেন।

এই থেকে বোঝা যায়—

সান্ডা হারাম নয়, কিন্তু

এটা খাওয়া রাসুল (সাঃ) পছন্দ করেননি।

আরেকভাবে বলা যায়—

> শরীয়তে এটা সরাসরি নিষিদ্ধ না হলেও, একজন মুসলমান হিসেবে সতর্ক থাকা উচিত। যা অপছন্দনীয়, তা থেকে দূরে থাকাই ভালো।

---

তাহলে এত ভাইরাল কেন?

এই প্রশ্নটাই সবচেয়ে মজার।

একটা প্রাণী, যার সম্পর্কে বিজ্ঞান বলে — “খাওয়া উচিত নয়”,

ইসলাম বলে — “খেলে ক্ষতি নেই, তবে রাসুল (সাঃ) নিজে খাননি”,

সেটা নিয়ে টিকটক, রিলস, মিম, নাটক, স্ক্রিপ্ট বানিয়ে লোকজন হিট হচ্ছে!

কেন?

কারণ একটাই—

> মানুষ এমন জিনিসে মজা পায়, যেটা লুকানো, অদ্ভুত আর একটু নিষিদ্ধের মতো লাগে।

“সান্ডা পাইলাম”, “সান্ডা ভাই”, “সান্ডার তেল আনলাম”— এসব কথায় হাস্যরস, ব্যঙ্গ, এবং যৌন ইঙ্গিত— এই তিন মেশানো থাকে। তাই তো এটা ভাইরাল হয়, ভাইরাল রাখে মানুষ।

---

আমার মনে হয়, সান্ডা একটা জীব মাত্র।

তাকে ঘিরে বানানো গল্প, বিশ্বাস বা গুজব মানুষ বানিয়েছে নিজের সুবিধার জন্য।

আজকের দিনে সবচেয়ে বড় সত্য হলো —

> “সঠিক জ্ঞান ছাড়া কোনো কিছু বিশ্বাস করো না।”

সান্ডা তেল খেয়ে যদি কেউ নিজেকে সুপারম্যান ভাবেন, সেটা হয়তো বিশ্বাসের দিক থেকে ঠিক, কিন্তু বাস্তবে তা না।

স্বাস্থ্য, ধর্ম, বিজ্ঞান — সব কিছুর সঠিক ব্যাখ্যা জানতে হয়। নয়তো সমাজ হাসবে, শরীরও হারাবে।

ভাইরাল সব খবর রা খবর